পশ্চিমবঙ্গে গরম পড়ে গেছে। যার জেরে একাধিক জেলায় তীব্র গরমের কারণে মর্নিং স্কুল (Morning School) চালুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্কুলের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একই সঙ্গে, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় (Primary Education System) পরীক্ষাপদ্ধতি ও সিলেবাসে বড়সড় পরিবর্তন করা হয়েছে। নিচে এই দুটি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হলো।
মর্নিং স্কুল – স্কুলের নতুন সময়সূচি
পশ্চিম মেদিনীপুরে মার্চ মাসের শেষ থেকেই তাপমাত্রা ৩৯.৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এই অতিরিক্ত গরমের কারণে গরমের ছুটির আগেই (Summer Vacation) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান অনিমেষ দে ঘোষণা করেছেন যে, ১৬ এপ্রিল থেকে জেলার সমস্ত প্রাথমিক ও নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলগুলি প্রাতঃকালীন শিফটে পরিচালিত হবে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী:
- সোমবার থেকে শুক্রবার: সকাল ৬:৩০ থেকে ১১:০০ পর্যন্ত।
- শনিবার: সকাল ৬:৩০ থেকে ৯:৩০ পর্যন্ত।
এই সময়সূচি পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের তীব্র গরমের হাত থেকে রক্ষা করা এবং তাদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে যে, এই সময়সূচি মেনে মিড-ডে মিল প্রদান করতে হবে। যদি ভবিষ্যতে তাপপ্রবাহ বা অন্য কোনো জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তবে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবর্তন: সেমেস্টার পদ্ধতি ও সিলেবাসে নতুনত্ব
রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) প্রাথমিক শিক্ষায় (Primary Education) বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে পরীক্ষা পদ্ধতি ও সিলেবাসে পরিবর্তন করা হবে। প্রধান পরিবর্তনগুলি হলো
- সেমেস্টার পদ্ধতি: এখন থেকে বছরে দুটি সেমেস্টার পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম সেমেস্টার জানুয়ারি থেকে জুন এবং দ্বিতীয় সেমেস্টার জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
- পরীক্ষার নম্বর বিভাজন:
-
প্রথম সেমেস্টার: ৩০ নম্বরের সামেটিভ পরীক্ষা এবং ২০ নম্বরের ফরমেটিভ মূল্যায়ন (প্রজেক্ট ও অন্যান্য কার্যক্রম)।.
-
দ্বিতীয় সেমেস্টার: ৫০ নম্বরের সামেটিভ পরীক্ষা।
-
-
প্রশ্নপত্র প্রণয়ন: আগে স্কুলগুলি নিজস্বভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করত, কিন্তু এখন থেকে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করবে। তবে, উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর থাকবে।
-
শিক্ষক প্রশিক্ষণ: নতুন পদ্ধতিতে পাঠদানের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তারা সঠিকভাবে নতুন সিলেবাস ও পরীক্ষাপদ্ধতি পরিচালনা করতে পারেন।
এই পরিবর্তনগুলির লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের সমগ্র বিকাশ নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার মান উন্নত করা। নতুন সেমেস্টার পদ্ধতি ও সিলেবাসের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা আরও কার্যকরভাবে শিখতে পারবে এবং তাদের মূল্যায়ন আরও সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন, প্রতিমাসে ৭০০০ টাকা করে পাবেন। নতুন স্কিম চালু হলো। LIC বীমা সখী যোজনায় কিভাবে আবেদন করবেন?
উপসংহার:
পশ্চিম মেদিনীপুরের তীব্র গরমের কারণে স্কুলের সময়সূচিতে পরিবর্তন এবং রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষায় সেমেস্টার পদ্ধতি ও সিলেবাসে নতুনত্ব শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও শিক্ষার মান উন্নত করতে সহায়তা করবে। অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উচিত এই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নির্দেশিকা মেনে চলা, যাতে সবার মঙ্গল নিশ্চিত হয়।