সবচেয়ে বেশি যে খবর নিয়ে তোলপাল হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি সেটা হলো প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বা Primary TET নিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য জুড়ে যে দুর্নীতি শুরু হয়েছে তাতে রাজ্যের টেট প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। টেট প্রার্থীরা এই দুর্নীতির জন্য পথে নেমেছেন। রাতের পর রাত রাস্তায় বসে মিছিল মিটিং করছেন। তবুও রাজ্য সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ হয়নি। যারা কম নাম্বার পেয়েছে এমন অনেক চাকরি প্রার্থী শিক্ষকের আসনে বসে আছেন। আর যারা সত্যিকরের বেশি নাম্বার পেয়েছেন তারা আজ পথে বিক্ষোভের শামিল হয়েছেন।
West Bengal Primary TET Recuritment
শুধুমাত্র এই আন্দোলন বিক্ষোভের পথেই থেমে থাকেনি। আন্দোলন পৌঁছে গিয়েছে মামলা অবধি। সুপ্রিম কোর্টে চলছে মামলার শুনানি। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন বি এড ও ডি এল এড দুই ধরনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা প্রাথমিক শিক্ষকের পরীক্ষায় বা Primary TET বসতে পারবেন। কিন্ত সুপ্রিমকোর্টে মামলার রায় বেরোলো যাতে বি এড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যারা আছেন তাদের ভাগ্য আর সহায় হলনা।
কারণ মামলার রায় অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকের (Primary TET) চাকরি করার ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রি প্রাপ্ত চাকরি প্রার্থীদের আর কোনো সুযোগ থাকবেনা। হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট এই রায় জানিয়েছেন। শুধুমাত্র ডি এল এড প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করতে পারবে। বিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের পরীক্ষা দিতে পারবেন।
কারণ প্রাথমিক লেবেলের পড়ানোর জন্য ডি ইএল এড হলেই যথেষ্ট। এরপর আবার 2018 সালে NCT একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে জানায় বিএড প্রশিক্ষিতরাও প্রাথমিকে চাকরির যোগ্য। তবে তার একটি শর্ত আছে সেটা হলো চাকরি পেয়ে গেলে ব্রিজ কোর্স করতে হবে 6 মাসের। যদিও সুপ্রিম কোর্ট এই রায়কে মান্যতা দেননি। কারণ একটি চাকরি পরীক্ষার জন্য দুটো প্রশিক্ষিত রা চাকরির সুযোগ পেলে ডি ইএল এড করা চাকরি প্রার্থীরা প্রাথমিকে (Primary TET) চাকরি করার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন।
টেট পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা। নিয়োগ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা। পর্ষদ কি জানাচ্ছে?
তাই বেশিরভাগ রাজ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় অন্যান্য রাজ্যের রায় ডি ইএল এড প্রার্থীদের পক্ষেই ছিল। বেশিরভাগ রায় ডি ইএল এড প্রার্থীদের পক্ষে থাকায় তাদের কথাকেই মান্যতা দেন সুপ্রিমকোর্ট। প্রসঙ্গত, বি এড প্রার্থীদের পক্ষ থেকে গতবছর রায় দেওয়ার সময় তারা জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে 2014 ও 2016 সালের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউ দেওয়া হিয়েগেছিল (Primary TET)।
তারপরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন বি এড প্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অংশ গ্রহণ করতে পারবেনা। তাই তারা আর্জি জানিয়েছিল 2022 এ যখন প্যানেল প্রকাশ করা হবে যারা ইন্টারভিউতে পাশ করেছিল তাদের নাম যেন প্যানেলে রাখা হয়। এইজন্য 2022 এর প্যানেল প্রকাশে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্ত সেই রায় শেষ পর্যন্ত বেড়াল।
নিয়োগ নিয়ে স্বস্তির রায় জানালো সুপ্রিম কোর্ট! অবশেষে হাসি ফুটেছে চাকরি প্রার্থীদের
আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে গেলো আগের বছর 2023 এর আগস্ট মাসে যা রায় দেওয়া হয়েছিল সেটাই অপরিবর্তিত থাকছে। ইন্টারভিউতে পাশ করলেও কোনো বি এড প্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীর নিয়োগ হবেনা। ডি এল এড দের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলেও অন্যদিকে বি এড দের জন্য চিরকালের মতন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসা বন্ধ হয়ে গেলো। তাদের আর শেষ রক্ষা হলোনা। এমন আরও নিত্য নতুন খবর পেতে নিয়মিত ফলো রাখুন আমাদের পেজে।
Written by Shampa Debnath