পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance বা DA) নিয়ে বহু প্রতীক্ষিত মামলা অবশেষে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে উঠতে চলেছে। এই মামলাটি ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে ১৫ বার শুনানির তালিকায় উঠলেও, প্রত্যেকবারই তা দুই বিচারপতির বেঞ্চে ছিল। এবার প্রথমবার তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানির তারিখ নির্ধারিত হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
মহার্ঘ ভাতা মামলার আপডেট
সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক ‘কজ লিস্ট’ অনুযায়ী, ২২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ডিএ মামলাটি বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে।
- এই কজ লিস্টে ডিএ মামলাটি ৫ নম্বর বেঞ্চে রয়েছে।
- ক্রম তালিকায় মামলাটি রাখা হয়েছে ৫১ নম্বরে।
- তবে মামলাটির পাশে উল্লেখ রয়েছে: “Taken up high on the board”, অর্থাৎ গুরুত্ব দিয়ে উপরের দিকে শুনানি হতে পারে।
আগের শুনানির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
এই মামলাটি সর্বশেষ শুনানি হয়েছিল ২৫ মার্চ, যেখানে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল উপস্থিত ছিলেন। সেদিন বিস্তারিত শুনানি না হলেও, পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছিল ২২ এপ্রিল। আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, যেন মামলাটি কজ লিস্টে উপরের দিকে রাখা হয়।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে ১০ শতাংশ ডিএ ঘোষণা। কবে থেকে বেতন বাড়ছে? বিজ্ঞপ্তিতে কি বলা আছে?
কর্মী সংগঠনের আশা
ডিএ মামলার অন্যতম আবেদনকারী সংগঠন “কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ”-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবার তাঁরা বিস্তারিত শুনানির আশায় রয়েছেন। এর আগে যে ১৫ বার মামলাটি তালিকায় উঠেছে, প্রতিবারই হয় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, নয়তো প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে।
- তাঁদের মতে, এবার তিন বিচারপতির বেঞ্চে মামলাটি তোলার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে।
- বিস্তারিত শুনানি হলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা একটি বড় সুরাহার দিকে এগোতে পারেন।
আরও পড়ুন, অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই ও জমির দলিল চেক করুন। অনলাইনে জমির রেকর্ড ও পর্চা বের করার নিয়ম
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সুনানি?
এই মামলাটি শুধু একটি আইনি লড়াই নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীর ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীরা দাবি করে আসছেন, তাঁদের কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মতো হারে ডিএ দেওয়া হোক। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই দাবিকে অস্বীকার করা হলেও, কর্মচারীরা বিষয়টি সুপ্রীম কোর্ট পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছেন।
মঙ্গলবারের শুনানি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনতে পারে। যদি তিন বিচারপতির বেঞ্চে বিস্তারিত শুনানি হয়, তাহলে হয়তো বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা ডিএ মামলায় শেষ পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত নির্দেশ আসতে পারে। সবার নজর এখন শীর্ষ আদলতের দিকেই।