সরকার জনসাধারণের জন্য একটি নতুন লোন দেওয়ার ব্যবস্তা করেছে যার নাম MSME Loan. এর সাথে যেমন বিভিন্ন প্রকল্প এনেছেন তেমনি ঋণ দেওয়ার মতন কিছু প্রকল্প চালু করেছেন। এই সমস্ত প্রকল্প চালু করার একটাই উদ্দেশ্য দেশের দরিদ্র থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের আর্থিক সহায়তা করা। সেইসাথে ঋণ দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো এই টাকা নিয়ে ব্যাবসা করে নিজের পায়ে দাড়াতে পারে এই যুগের যুব সম্প্রদায়। যেহেতু দেশে এই মুহূর্তে সরকারি চাকরি পাওয়া খুবই দুষ্কর। যদিও পরীক্ষা হয় কিন্ত তার নিয়োগ হওয়া কতটা দুর্নীতি মুক্ত সেটা ভাবার বিষয়।
Get MSME Loan Online Now
তাই ডিগ্রি অর্জন করেও লাখ লাখ পড়ুয়ারা বেকার হয়ে ঘরে বসে আছে। যাদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো তাদের ব্যাবসা করার মতন মূলধন রয়েছে বলে ব্যাবসা করছেন কিন্ত যাদের ব্যাবসা করার মতন মূলধন নেই তাদের বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে। তবে এইসমস্ত বেকার যুবক যুবতীদের জন্যই সরকার থেকে এক বিশেষ লোনের ব্যাবস্থা করেছে। যার নাম MSME Loan.
এই লোন আবার তিনটি ভাগে বিভক্ত। এই MSME লোন বিশেষতভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্যই তৈরি হয়েছে। তাই এখান থেকে আপনি সহজ শর্তে লোন নিয়ে নিজের ব্যবসাকে বড় করতে পারবেন এছাড়া সেইসাথে ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন। MSME ফুল ফ্রম হল মাইক্রো, স্মল, মিডিয়াম। অর্থাৎ তিন ধরনের ব্যাবসার জন্যই লোন দেওয়া হয়ে থাকে।
১.মাইক্রো – MSME এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, যে সকল শিল্প গুলিতে ১ কোটির বেশি বিনিয়োগ করা হয় না এবং ৫ কোটির বেশি টার্নওভার আসে না সে গুলিকে মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রি বলা হয়।
২. স্মল – যে সকল শিল্প গুলিতে বছরে ১০ কোটির বেশি বিনিয়োগ হয় না এবং ৫০ কোটির বেশি রিটার্ন আসে না সে গুলিকে বলা হয় স্মল ইন্ডাস্ট্রি।
৩. মিডিয়াম – বার্ষিক ৫০ কোটি পর্যন্ত বিনিয়োগ এবং ২৫০ কোটি পর্যন্ত টার্নওভার ওলা যে কোম্পানি গুলি সে গুলিকে মিডিয়াম ইন্ডাস্ট্রির আওতায় ধরা হয়েছে।
এছাড়া MSME সেক্টর প্রধানত দেশের সমস্ত ধরনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের শিল্প গুলিকে চালনা করে। ভারত সরকার ২০০৬ সালে প্রথম MSME Act পাস করে সমস্ত এই ধরনের শিল্প গুলিকে এক সারিতে নিয়ে আসে। ভারতের মতো শ্রমনিবিড় দেশ গুলিতে অর্থনীতির মেরুদন্ড MSME। প্রত্যেক বছর আমাদের দেশে যত তরুণ তরুণী কাজের জায়গায় পা রাখছেন, সেইসব ছোট মাঝারি শিল্প গুলোতে চালক শক্তি এই MSME.
ভারতে নথিভুক্ত MSME Unit সংখ্যা ৬.৩৪ কোটি। উৎপাদন ক্ষেত্রের GDP তে যাদের অবদান ৬.১১%। আর পরিষেবা ক্ষেত্রের জিডিপিতে ২৪.৬৩%। এই দেশ থেকে যা রফতানি হয় তার মধ্যে ৪৫ শতাংশই করে ছোট মাঝারি সংস্থা। এই ক্ষেত্রে প্রায় ১২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত আছে। তাই তরুণ তরুণী সুবিধাতে এই লোন বা MSME Loan এনেছেন রাজ্য সরকার।
MSME লোন নেওয়ার শর্ত
১) MSME লোনের মেয়াদ ১২ থেকে ৬০ মাসের। এই মেয়াদে এই লোন আপনি পরিশোধ করতে পারবেন।
২. MSME Loan নিতে গেলে আপনাকে কোন জামানত হিসেবে রাখার প্রয়োজন পড়ে না।
৩. এক্ষেত্রে সুদের হার অন্যান্য লোনের তুলনায় অনেক কম।
৪. MSME লোন আপনি অনলাইনের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারেন।
৫. এখানে Quick Loan দেওয়ার ব্যবস্থা আছে অর্থাৎ Instant Loan পাওয়া যায় আবেদন করলেই।
৬. তেমন কোনো নথিপত্র দেখাতে হয় না এখানে।
৭. কোনো স্বীকৃত অভিজাত প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগপতিরা এখানে আবেদন করলে লোনের উপর আরো বিশেষ কিছু অফার দেওয়া হয়।
৮) এই লোন পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২২।
৯) আবেদনকারীকে অবশ্যই নিজের একটি কোম্পানি চালাতে হবে। সেটা ট্রেডিং, ম্যানুফ্যাকচারিং বা কোনো সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানি হতে পারে।
১০) আবেদনকারীর নূন্যতম ৫ বছরের যে কোনো ব্যবসার অভিজ্ঞতা এবং ৩ বছরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
১১) আবেদনকারীর বার্ষিক টার্ন ওভার বা লাভ অন্তত পক্ষে ২ লক্ষ টাকা হতে হবে।
১২) Udayam পোর্টালে অবশ্যই আবেদনকারীর ব্যবসার নাম MSME শংসাপত্র নথিভুক্ত থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি
১) সবার প্রথমে MSME এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
২) লোনের জন্য আবেদন পত্র স্ক্রিনে আসবে। সেটা ভালো করে পড়ে পূরণ করুন।
৩) আবেদনপত্র ফিলাপ হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করুন (MSME Loan).
৪) এরপর MSME আপনার সঙ্গে লোনের চুক্তি করবে। চুক্তিতে একবার ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে সমস্ত Terms And Conditions মিলিয়ে নিয়ে agrree করুন। এরপর চুক্তিতে সাইন করুন।
৫) এরপর MSME Loan পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনার একাউন্টে লোনের টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
আপনিও যদি বেকার হয়ে ঘরে বসে আছেন কিভাবে নিজের ভবিষ্যত গড়বেন বুঝে উঠতে পারছেননা তাহলে এই MSME Loan নিয়ে নিজের ব্যাবসা গড়ে তুলুন। সরকারের সাহায্যে নিজের প্রচেষ্টায় শিল্পকে সম্প্রসারিত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য MSME লোনের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
Written by Shampa Debnath