প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। ই শ্রম কার্ড অনলাইন আবেদন করুন, পেয়ে যান অনেক সুবিধা

সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষদের ই শ্রম কার্ডের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা করে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। E Shram Card এর সুবিধা, যোগ্যতা, আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন।

ই শ্রম কার্ডের সুবিধা যোগ্যতা ও আবেদন পদ্ধতি

ভারতবর্ষে এখনো বেশিরভাগ মানুষ অসংগঠিত কর্মক্ষেত্রের সাথে যুক্ত। যে সকল ব্যক্তিরা সরকারি জব করেন, তাঁরা অবসরের পর পেনশন পেয়ে থাকেন, যেটা তাদের বয়সকালে অনেকটাই সুবিধা হয় জীবনধারণ থেকে চিকিত্সার জন্য। এছাড়া বেসরকারি কাজেও এখন PF ও অন্যান্য সুবিধা থাকে। এই সকল কাজের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করেন যেটা দিয়ে ভবিষ্যত সুরক্ষিত থাকবে, কিন্ত দেশে যে সকল ব্যক্তি অসংগঠিত কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের যুবক বয়সে পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করতে পারলেও বয়সকালে অর্থ উপার্জন করার শক্তি থাকবেনা।

অসংগঠিত ক্ষেত্রে যারা কাজ করেন তাদের সাধারণত শ্রমিক বলে আমরা চিনে থাকি। এদেশের ৪০ কোটির বেশি মানুষ প্রতিদিন অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন অথচ এই বিপুল সংখ্যক মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা বা ভবিষ্যৎ সঞ্চয় বলে কিছু নেই। তাই এদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন যার নাম ই শ্রম প্রকল্প। এই কার্ডের জন্য যদি আপনি আবেদন করেন তাহলে প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা করে পাবেন, যেটা জমতে থাকলে বয়সকালে আপনার খাওয়া, চিকিৎসা খরচ চালাতে কোনো সমস্যা হবেনা।

কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত দেশের ২০ কোটি কোটি মানুষ এই ই-শ্রম কার্ডে নাম নথিভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে ২ কোটি মানুষ এর অন্তর্ভুক্ত পরিষেবাগুলি পেতে শুরু করেছেন। বাকিদেরও খুব দ্রুত এই পরিষেবার সাথে যুক্ত করা হবে।

ই শ্রম কার্ড করতে কি কি লাগে?

দেশের এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকদের বৃদ্ধ বয়সে যখন উপার্জন করার শক্তি থাকবেনা তখন তারা পেনশনও পাবে না, একপ্রকার বেকার হয়েই দিন কাটবে। বয়সকালে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে বেশি দরকার শরীরের যত্ন নেওয়া। খাওয়া দাওয়া, চিকিত্সার খরচ চালানোর জন্য সরকার থেকে পেনশন এর মতন একটা টাকা প্রতিমাসে ব্যাংকে দিয়ে দেবে, যাতে তাদের বয়সকালে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়। এই কার্ডে আপনার নাম নথিভুক্ত থাকলে তবেই PMAY, PMJAY, PM Kisan সহ একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

ই শ্রম কার্ডের সুবিধা

  • ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি মাসে ৩,০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন।
  • কর্মরত অবস্থায় কোনও কারণে পঙ্গু হয়ে গেলে বা অঙ্গহানি হলে ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন।
  • মারা গেলে মারা গেলে পরিবার ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পাবে।

ই শ্রম কার্ড কারা করতে পারবে

১) আপনাকে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে এবং মাসিক আয় আয়কর সীমার নিচে থাকলে তবে ই-শ্রম কার্ডে নাম নথিভুক্ত করা যাবে।
২) ১৬-৫৯ বছরের মধ্যে বয়স হলে তবেই ই-শ্রম কার্ডে নাম নথিভুক্ত করা যাবে। ৬০ বছর পর থেকে প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পাবেন।
৩) যারা কর্মচারী ভবিষ্যৎ নীধি (EPF) ও ESI সুবিধা পান না তাঁরা এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।

ই শ্রম কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা

  • আপনি সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাবেন।
  • E Shram Card থাকলে আপনি বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
  • এটি আপনাকে আরও কাজের সুযোগ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
  • ১ বছরের জন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে না।
  • সরকার আরও ভাল সহায়তা প্রদানের জন্য অভিবাসী শ্রমিকদের ট্র্যাক রাখতে পারে।
  • আবেদনকারী মারা গেলে বা দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে অক্ষম হলে 2 লাখ টাকা পাবেন, আর যদি আপনি যদি দুর্ঘটনায় আংশিকভাবে অক্ষম হন তবে আপনি 1 লাখ টাকা পাবেন।

আরও পড়ুন, ৩৫১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কারা এই টাকা পাবেন জেনে নিন

ই শ্রম কার্ড করতে কি কি লাগে?

(১) আধার কার্ড
(২) মোবাইল নম্বর
(৩) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
৪) পাসপোর্ট সাইজ ছবি

টাকা পেতে আবেদন করুন

ই শ্রম কার্ড অনলাইন আবেদন পদ্ধতি

অনলাইনেই আপনি আবেদন করতে পারবেন।
প্রথমে সরকারি পোর্টালে যেতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন করে যে ফর্ম আসবে, সেটা ভালো ভাবে পূরণ করে নিতে হবে। এরপর নথি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। এরপর সাবমিট করলেই আবেদন সম্পন্ন হবে।
বাড়িতে ছাড়াও আপনি নিকটবর্তী কোনো CSC সেন্টারে গিয়েও ই-শ্রম কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রীর এমন এক প্রকল্প শ্রমিকদের বৃদ্ধ জীবনে অনেকটাই নিশ্চয়তা আনবে এই শ্রমিক কার্ড।