রেশন কার্ড গ্রাহকদের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মিলিত প্রয়াস বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প (Free Ration Scheme). এই বিনামূল্যে রেশন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ মানুষ তাদের Ration Card দিয়ে প্রত্যেক দিনের ন্যূনতম খাদ্য চাহিদা পূরণ করার সুযোগ পায়। এখনো পর্যন্ত দেশের যে সমস্ত নিম্ন দরিদ্র মানুষ রয়েছেন, যাদের পক্ষে দুবেলা দুমুঠো অন্ন সংস্থান করার জন্য অনেকটাই কাঠখড় পোড়াতে হয়। এই সমস্ত মানুষদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করার জন্যই রেশন প্রকল্পের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হয়।
রেশন কার্ডে বিনামূল্যে খাদ্যদ্রব্য প্রদান
পরিবারের আয়ের ভিত্তিতে রেশন প্রকল্পের কার্ড বিভিন্ন ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। রেশন কার্ড ক্যাটাগরি ভিত্তিক খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ ভিন্ন হয়। কে কত পরিমাণ রেশন দ্রব্য পাবেন তা রেশন কার্ডের মধ্যেই উল্লেখ করা থাকে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন উৎসব ও পুজো পার্বণে রেশনে অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হয়, সেই সাথে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। সামনে আসতে চলেছে রমজান উৎসব।
রমজান উপলক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত রেশন সামগ্রী প্রদান
রমজান মাস উপলক্ষে ফেব্রুয়ারি মাস ব্যাপী অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য তথা Free Ration items list দেওয়া হবে, এমনটি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। রমজানের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এই প্যাকেজের মধ্যে কি কি খাদ্যদ্রব্য থাকছে, পরিমাণ কি রয়েছে, কাদের জন্য এই অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য (Ration Items List) দেওয়া হবে, এই সকল তথ্য থাকতে আজকের এই প্রতিবেদনে। সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পবিত্র মাসে মানুষের পর্যাপ্ত খাবার নিশ্চিত করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উৎসবের সময় যাতে প্রত্যেকটি পরিবার পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য পেতে পারে, তার জন্যই এই বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ৬ কোটি রেশন কার্ডধারীদের জন্য এই প্যাকেজ উপলব্ধ রয়েছে।
রমজানের জন্য বিশেষ কি প্যাকেজ করা হয়েছে
রেশন থেকে প্রত্যেক মাসে চাল ও আটা দেওয়া হয়। রমজান মাস উপলক্ষে রেশন প্যাকেজগুলিতে আটা, চিনি এবং ছোলার মতো মৌলিক জিনিসপত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক Ration Card পিছু এই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য ১ কেজি করে বরাদ্দ থাকবে।
আরও পড়ুন, প্রতিমাসে ১০০০ টাকা দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের এই নতুন প্রকল্পে। এইভাবে আবেদন করুন
রেশন ডিলারদের জন্য নির্দেশনা
রাজ্য সরকারের তরফের প্রত্যেক রেশন ডিলারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে রেশনের E-POS মেসিন ব্যবহার করা হয় সঠিকভাবে এবং প্রত্যেকটি খাদ্যদ্রব্য পরিমান এই ই-পস মেশিনে মেপে রেশন গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে হবে। রমজান উপলক্ষে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাতে কোন রকম কারচুপি না হয় সেদিক লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে রেশন ডিলারদের।
রাজ্যবাসী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বেশ কিছু রেশন ডিলারদের এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। রমজান মাস উপলক্ষে স্পেশাল যে প্যাকেজ সিস্টেম করা হয়েছে অতিরিক্ত খাদ্য সামগ্রীর, সেই খাদ্য সামগ্রী কত দামে দেওয়া হবে সেই ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, বিক্রয় মূল্য কত করে হবে সেই সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা না দেওয়া হলে ডিলারদের পক্ষে এই ব্যাপারে বোঝাটা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, এজন্যই অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু খাদ্যদপ্তরের প্রধান সচিব পারভেজ আমেদ সিদ্দিকিকে চিঠি দিয়ে এই ব্যাপারে আলোকপাত করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়া ইতিমধ্যে কলকাতার একটি হোটেলে বৈঠক করেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য খাদ্যদপ্তর, এফসিআই এবং সিডব্লুসি আধিকারিকরা। রেশনের খাদ্য সামগ্রী ঠিকঠাক মতন ভাবে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ হচ্ছে কিনা এবং যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ব্যবস্থা হয় এ সমস্ত ব্যাপারে আলোচনা উঠে এসেছে বৈঠকে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
কেন্দ্রীয় সচিব এই বৈঠকে এটাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রেশন ডিলারশিপদের কমিশন বৃদ্ধির দায় রাজ্য সরকারের উপরে বর্তাবে। এছাড়া চটের বস্তায় ভরে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করার কথাও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সচিব। রেশন গ্রাহকরা যাতে সঠিক পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী পেতে পারে এবং খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাতে কোনো রকম কারচুপি না হয় সেদিকে বিশেষ নজর ব্যবস্থা রাখার কথা জানানো হয়েছে বৈঠকে। বলা যেতেই পারে, রমজান মাসে রেশন গ্রাহকদের অনেকটাই সুরাহা হতে চলেছে বাজারের থেকে অনেক কম দামে অতিরিক্ত দ্রব্য পাওয়ার জন্য। এই সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত জানতে হলে পরবর্তী প্রতিবেদন গুলো লক্ষ্য রাখুন।