রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রাজ্য সরকারি স্কুলগুলোতে মিড ডে মিলের বা Mid Day Meal ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় অনেক বছর হলো। এই মিড ডে মিলের ব্যাবস্থা করার ফলে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে যে সমস্ত স্কুলগুলো রয়েছে সেখানে পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কথায় আছে “পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি “, ক্ষুদার্থ পেটে কখনো পড়াশোনা হয় না।
Mid Day Meal New Menu
মিড ডে মিল বা Mid Day Meal শুরু হওয়ার আগে দেখা যেত প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে বাচ্চারা স্কুলে আসতে চাইতো না। তাদের পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যাতে তাদের দুবেলা পেট ভরে খাবার খাওয়াটাই দুঃস্বপ্ন ছিল। সেই অবস্থায় পড়াশোনা করতে চাইতনা বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মিড ডে মিল চালু হওয়ার পরে স্কুলগুলোতে রান্না ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
তাই পড়ুয়ারা স্কুলে পড়াশোনা করে টিফিন বেলায় দুপুরের আহার খুব সুন্দর করে পেট ভরে খেতে পারে।
এর ফলে পেটো ভর্তি থাকে আর এর সাথে পড়াশোনাটাও খুব ভালো মতন আয়ত্ত হয়। মিড ডে মিল বা Mid Day Meal চালু হওয়ার পরে, পড়ুয়াদের স্কুলে আসার আকাঙ্ক্ষাও বেড়ে গিয়েছে। তবে এই মিড ডে মিলের মেনু দিন বিশেষে আলাদা থাকে।
সপ্তাহের প্রত্যেকটি দিন আলাদা আলাদা মেনু করা হয় যাতে স্কুলের পড়ুয়ারা সকল প্রকার আহারের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে। তাই খাবারের তালিকায় যেরকম ভাত, ডাল, সবজি থাকে এরকম কোন কোন দিন মাংস, মাছ, ডিম এমনও খাবার দেওয়া হয়। কিছুদিন আগেই প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল মানুষজন। এই গরমে যাতে পড়ুয়াদের শরীর ভালো থাকে তার জন্য রাজ্যের বহু স্কুলে দেখা গিয়েছিল মরসুমি শাকসবজি পড়ুয়াদের পাতে তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা।
কখনো দেখা গিয়েছিল কাঁচা আম দিয়ে টক ডাল আবার কখন দেখা গিয়েছিল পড়ুয়াদের পাতে সমস্ত সবজি দিয়ে পুষ্টিকর খাবার। তবে এবার মিড ডে মিলের বা Mid Day Meal পাতে যে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে তা একেবারেই নতুন এবং বলা যেতে পারে খুব ভালোলাগার ও পছন্দের খাবার। এটা এমন একটি খাবার যে খাবারের জন্য প্রায়ই দেখা যায় পড়ুয়ারা বাবা মায়ের কাছে বায়না করে সেটা কিনে দেওয়ার জন্য।
তবে এবার আর বায়না করতে হচ্ছে না। স্কুলের কর্তৃপক্ষ থেকেই এই খাবারটি প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে সযত্নে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু প্রচন্ড গরমে বাচ্চারাও অতিষ্ঠ হয়ে রয়েছে তাই এবার মিড ডে মিলের খাওয়া-দাওয়া শেষে প্রত্যেক পড়ুয়াকে আইসক্রিম দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হলো পুরুলিয়ার একটি স্কুলের পক্ষ থেকে। পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত সিন্দরি চাষ রোড উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এমন আয়োজন করা হয়। জানা যাচ্ছে, গত শনিবার স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন আয়োজন করেছিল।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক পড়ুয়াকে দেওয়া হবে 10,000 টাকা, কিভাবে আবেদন করবেন দেখুন
মিড ডে মিলের বা Mid Day Meal আহার শেষের পরে স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আইসক্রিমের ঠেলা গাড়ি থেকে একটি করে আইসক্রিম দেওয়া হয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের। আর আইসক্রিম এমন একটি খাদ্য যেটা বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই পছন্দ করে আর তাও এই গরমে শরীরকে ঠান্ডা করার জন্য যদি আইসক্রিম দেওয়া হয় তাহলে আর কথাই নেই।
আইসক্রিম পেয়ে পুরুলিয়ার সেই স্কুলের সমস্ত পড়ুয়া আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। তাদের মুখে এই অনাবিল আনন্দ দেখে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও অনেকটাই আত্মতৃপ্তি পেয়েছিল। ছোট ছোট পড়ুয়াদের মুখের এইটুকু হাসির জন্য এইটুকু প্রচেষ্টা তো করা যেতেই পারে এমনটাই বলতে শোনা গিয়েছে পুরুলিয়ার সিন্দরি চাষ রোড উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।
Written by Shampa Debnath.