প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ (Primary TET Merit List) নিয়ে প্রতিনিয়ত যে দুর্নীতির খবর শোনা যায় তাতে সত্যি কারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার শিক্ষকদের স্বপ্ন একেবারে ভেঙ্গে যাওয়ার অবস্থা হয়। কিছুদিন আগেও ২০১৬ সালের এসএসসি টেট নিয়ে যে দুর্নীতির খবর সামনে আসে তাতে এখনো পর্যন্ত উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তবে এবার প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য খুশির সংবাদ দিলো সংসদ। নতুন করে প্রকাশ করা হলো প্যানেল আর তাতেই ৭৯৪ জন শিক্ষকের নাম যুক্ত করা হলো।
794 Primary TET Merit List Publish by N24PGS DPSC
প্রসঙ্গত, প্রায় ১৫ বছর আগে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ চাকরির পরীক্ষায় বসেছিলেন সেই সব চাকরিপ্রার্থীরা। তার পর অনেক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তবুও আইনি জটিলতার জন্য সেইসব চাকরিপ্রার্থরা চাকরির মুখ এতদিন দেখতে পাননি। এত বছর পর ২০২৪ সালের সে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে (Primary TET Merit List).
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মামলাকারীদের চাকরি (Primary TET Merit List) দিতে হবে। দু’সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এর পাশাপাশি পূর্ববর্তী প্যানেলে অনিয়ম এবং স্বজনপোষণের যে অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারেও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক সংসদের কাছে জবাব তলব করেছেন বিচারপতি।
এই মামলাকারীদের পরীক্ষা (Primary TET Merit List) হয়েছিল ২০০৯ সালে এবং সেই সময় প্যানেলও তৈরি হয়েছিল। তবে ঠিক সেই মুহূর্তে ২০১১ সালে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের ফলে রাজনীতির সিংহাসনের পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার আসন গ্রহণ করেন এবং সেই সরকার ওই প্যানেল বাতিল করে এবং ২০১৫ সালে নতুন করে পরীক্ষা নেয়।
মামলাকারীদের আইনজীবী রবিলাল মৈত্র, রাজীতলাল মৈত্র, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়, আলি হাসান আলমগীর অভিযোগ জানান, ২০১৫ সালে যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল তাতে স্বজনপোষণ হয়েছিল। সেখানেও বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের বাদ দিয়ে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এতদিন পরে বৃহস্পতিবার, প্রাথমিক নিয়োগ ২০০৯-এ উত্তর ২৪ পরগনার পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা।
নতুন প্যানেল প্রকাশ এর মাধ্যমে প্রায় ৭৯৪ জন চাকরিপ্রার্থী চাকরি পেতে চলেছে। ২০০৯-এ প্রাথমিকের নিয়োগে উত্তর ২৪ পরগনায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, তা স্বীকার করল উত্তর ২৪ পরগনা প্রাইমারি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল। এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘কী চান? তদন্ত হোক? না বোর্ড চাকরি দেবে?’ কাউন্সিল এদিন বলে, ‘আমরা চাকরি দিতে প্রস্তুত।’ উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রাথমিক নিয়োগের বা Primary TET Merit List বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল এবং তার পরের বছর জেলাভিত্তিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, এক ধাক্কায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি ডিএ মুখ্যমন্ত্রীর নয়া ঘোষণা।
২০০৯ সালের সময় প্রাইমারি স্কুল শিক্ষকতার (Primary TET Merit List) জন্য কোন টেট পরীক্ষার বিষয় ছিল না সেইসাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকতার জন্য কোন প্রশিক্ষণ নিতে হতো না। পরীক্ষার পরপরই ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। এরপর চালু হয় TET পরীক্ষা। ২০০৯ সালের পরীক্ষা রাজ্য সরকার বাতিল করে দেয়। ২০১৪ সালে লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউও হয়। এই প্রসঙ্গে মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তার প্রেক্ষিতে নিয়োগ বাতিল করা সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশে খুশি চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের কথা তারা অনেক বছর ধরে এই আন্দোলন করে চলেছেন এই খুশির দিনটি দেখার জন্য এতদিন পরে তারা এই দিন দেখতে পেয়ে অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন। এখন শুধুই তাদের অপেক্ষা জয়েনিং লেটার হাতে পাওয়ার। অনেক অপেক্ষার পর বিজয়ের হাসি যেন তাদের এতদিনের আন্দোলনের সার্থকতা পেয়েছে।
Written by Shampa Debnath.